Main Menu

১৪ বছরে মোট ৪৪টি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি

রাজনৈতিক দলের নতুন নিবন্ধন দিতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন-ইসি। নিবন্ধত পেতে আগ্রহী দলকে আবেদনের জন্য চার মাস সময় দেওয়া হয়েছে। আগামী ২৯ আগস্ট পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। বৃহস্পতিবার (২৬ মে) ইসি সচিব মো. হুমায়ুন কবীর খোন্দকারের সেই করা এই গণবিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়।

এতে গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ এবং রাজনৈতিক দল নিবন্ধন বিধিমালার শর্ত পূরণে সক্ষম রাজনৈতিক দলকে আবেদন করার আহ্বান জানানো যাচ্ছে। নিবন্ধীকরণে আগ্রহীদেরকে দলীয় লেটারহেড প্যাডে দরখাস্ত করতে বলা হয়েছে। আবেদনপত্রে যেসব দলিলাদি জমা দিতে হবে গণবিজ্ঞপ্তিতে তাও উল্লেখ করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দলের গঠনতন্ত্র, দলের নির্বাচনি ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো এবং পতাকার ছবি, কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি বা সমমানের কমিটির সব সদস্যের পদবিসহ নামের তালিকা, দলের নামে রক্ষিত ব্যাংক অ্যাকাউন্ট নম্বর ও ব্যাংকের নাম এবং ওই অ্যাকাউন্টের সর্বশেষ স্থিতি, তহবিলের উৎসের বিবরণ, নিবন্ধনের দরখাস্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অনুকূলে প্রদত্ত ক্ষমতাপত্র, নিবন্ধ ফি বাবদ সচিব, নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের বরাবরে জমাকৃত অফেরতযোগ্য টাকার ট্রেজারি চালানের কপি (ট্রেজারিতে টাকা জমাদানের কোড নম্বর-১০৬০১০১১০০১২৫-১১০০০০০০০-১১০০১০০০-১৪২২২০৪) সংযুক্ত করতে হবে।

এছাড়া বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর হতে দরখাস্ত দাখিল করার তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের যেকোনও একটিতে দলীয় নির্বাচনি প্রতীক নিয়ে কমপক্ষে একটি আসন লাভের সমর্থনে প্রামাণিক দলিল, অথবা বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর হতে দরখাস্ত দাখিল করার তারিখ পর্যন্ত সময়ের মধ্যে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনের যে কোনও একটিতে দরখাস্তকারী দল কর্তৃক নির্বাচনে অংশগ্রহণকৃত নির্বাচনি এলাকায় প্রদত্ত মোট ভোট সংখ্যার শতকরা পাঁচ ভাগ ভোট লাভের সমর্থনে কমিশন বা কমিশনের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার ইস্যুকৃত প্রত্যয়নপত্র, অথবা দলের কেন্দ্রীয় কমিটিসহ, সেটা যে নামেই অভিহিত হোক না কেন, একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় দফতর অন্যূন এক-তৃতীয়াংশ প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর জেলা দফতর এবং অন্যূন একশ’টি উপজেলা বা ক্ষেত্রমতে, মেট্রোপলিটন থানায় কার্যকর দফতর এবং প্রতি উপজেলায় বা ক্ষেত্রমতে, থানায় অন্যূন দুইশ’ ভোটার সদস্য হিসেবে দলের তালিকাভুক্ত থাকার সমর্থনে প্রামাণিক দলিল।

সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে কোনও রাজনৈতিক দলকে নিবন্ধিত করার সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর ওই দলের অনুকূলে ইসি একটি নিবন্ধন সার্টিফিকেট প্রদান করবে এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের নাম সরকারি গেজেটে প্রকাশ করবে।

সর্বশেষ দল নিবন্ধনের জন্য ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। সময় দেওয়া হয়েছিল ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। তখন নিবন্ধন পেতে আবেদন করেছিল ৭৬টি রাজনৈতিক দল। তবে কোনও দলকে ওই সময় ইসি নিবন্ধন দেয়নি। পরে অবশ্য আদালতের আদেশে নিবন্ধন পায় জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম ও বাংলাদেশ কংগ্রেস।

তার পাঁচ বছর আগে ২০১৩ সালে গণবিজ্ঞপ্তি জারি করলে ৪৩টি দল আবেদন করেছিল। কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ কমিশন সে সময় বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) ও সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট এই দু’টি দলকে নিবন্ধন দেয়।

এক-এগারো সরকারের সময় ড. এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন কমিশন ২০০৮ সালে দেশে প্রথমবারের মতো দলগুলোকে নিবন্ধন দেয়। সে সময় ১১৭টি দল আবেদন করেছিল। যাচাই-বাছাইয়ে পর নিবন্ধন পায় ৩৯টি দল। সবমিলিয়ে গত ১৪ বছরে মোট ৪৪টি দলকে নিবন্ধন দিয়েছে ইসি। এর মধ্যে শর্ত পূরণে ব্যর্থ হওয়ায় ও আদালতের নির্দেশে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিলও করা হয়। ফলে বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল রয়েছে ৩৯টি।

নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্যে রয়েছে— বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি), গণতন্ত্রী পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি-এলডিপি, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম.এল), কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, জাতীয় পার্টি (জেপি), বিকল্পধারা বাংলাদেশ, জাতীয় পার্টি, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জেএসডি), জাকের পার্টি, গণফোরাম, গণফ্রন্ট, বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি, ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ কংগ্রেস, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদ, বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপি, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশন, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ-বিএমএল, বাংলাদেশ সাংস্কৃতিক মুক্তিজোট (মুক্তিজোট), বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট-বিএনএফ, জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলন-এনডিএম, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ ও ন্যাশনাল পিপলস পার্টি (এনপিপি)।

যে পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়েছে— বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ঐক্যবদ্ধ নাগরিক আন্দোলন, ফ্রিডম পার্টি, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টি (পিডিপি) ও জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।