Main Menu

হতাশা নয়, বিপদাপদে ধৈর্য ধারণ ও আল্লাহর শরণাপন্ন হই

নানা কারণেই আমরা হতাশাগ্রস্ত হই। বিপদে যদি কেউ ধৈর্যধারণ করতে না পারলে সামান্য সংকটেই ভেঙ্গে পড়ি। কখনো হতাশাগ্রস্তদের সঙ্গও আরেকজনকে হতাশ করে দেয়। আরবীতে প্রবাদ আছে-المرأ على دين خليله অর্থাৎ মানুষ তার বন্ধুর আদর্শই গ্রহণ করে থাকে। এটা স্বাভাবিক একট বিষয়। তাই কেউ যদি হতাশাগ্রস্তদের সঙ্গে ওঠাবসা করে, তাহলে এই হতাশায় একসময় সেও আক্রান্ত হবেই।

শুধু বিপদ আপদ নয়, অধিক কামনাও অনেক সময় আমাদের হতাশ করে তোলে। নিজের জীবন নিয়ে কিংবা জীবনের কোনও দিক নিয়ে যখন কেউ নিজ সামর্থ্যরে বিবেচনা না করে অনেক উঁচু স্বপ্ন দেখতে থাকে, এর পরিণতিতেও সে হতাশাগ্রস্ত হতে পারে। একের পর এক যখন আশাভঙ্গ হতে থাকে, তখনও আমরা হতাশাগ্রস্ত হই। আবার এমনও হয়- আকস্মিক কোনও বিপদ কেই এতটাই ভেঙ্গে পড়ে যে, আর মাথা সোজা করে সামনে এগিয়ে চলার হিম্মত করতে পারে না।

হতাশা যে কেবল পার্থিব বিষয়াদিকেই ক্ষতি করে এমন নয়, দ্বীনী ও পরকালীন বিষয়েও মানুষ হতাশাগ্রস্ত হয়। কারও যখন পাপের পরিমাণ বেশি থাকে, সারাদিন যখন কেউ বড় বড় পাপে ডুবে থাকে, যখন নিজেও পাপ করে, অন্যকেও পাপের দিকে ডাকে, মোটকথা, দিনের পর দিন মাসের পর মাস ধরে কেউ যখন কেবলই পাপই করে চলে, এমতাবস্থায় কেউ যদি দয়াময় প্রভুকে স্মরণ করতে চায়, তখন একরাশ হতাশা তাকে ঘিরে ধরতে পারে- আমার এতো এতো পাপ, আমার কি করে মুক্তি সম্ভব? গোনাহের পঙ্কিলতা থেকে পরিচ্ছন্ন হওয়ার সম্ভাবনা যতটুকু থাকে, তাও এ হতাশার কারণে শেষ হয়ে যায়। আবার এমন গোনাহগার কাউকে দেখে দ্বীনদার লোকেরাও অনেক সময় হতাশ হয়ে পড়ে- একে মনে হয় আর ভালো পথে আনা যাবে না!

হতাশা আল্লাহ তাআলার রহমত সম্পর্কে অজ্ঞতার ফল। আল্লাহর রহমত যখন ভাগ্যে জুটে, তখন তো ইসলামের চরম দুশমনও মুহূর্তের ব্যবধানে অন্তরঙ্গ বন্ধুতে পরিণত হয়। আল্লাহ তায়ালা বলেন,

قُلْ یٰعِبَادِیَ الَّذِیْنَ اَسْرَفُوْا عَلٰۤی اَنْفُسِهِمْ لَا تَقْنَطُوْا مِنْ رَّحْمَةِ اللهِ، اِنَّ اللهَ یَغْفِرُ الذُّنُوْبَ جَمِیْعًا، اِنَّهٗ هُوَ الْغَفُوْرُ الرَّحِیْمُ.

বলো, হে আমার বান্দাগণ! তোমরা যারা নিজেদের প্রতি অবিচার করেছ, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ থেকে নিরাশ হবে না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সকল গোনাহ ক্ষমা করে দেন। সন্দেহ নেই, তিনিই ক্ষমাশীল দয়ালু। -সূরা যুমার (৩৯) আল্লাহ তায়ালা নিজে নিরাশ হতে বারণ করেছেন, এটা বান্দার জন্য সুখবর। অতএব আমাদের নিরাশ না হয়ে সমস্ত বিপদ মুসিবতে আল্লাহর শরণাপন্ন হওয়া উচিৎ। আল্লাহ আমাদের সবাইকে ধৈর্য ধারণ করার তাওফিক দান করুন। আমীন