Main Menu

সিলেটে শেষটায়ও বাংলাদেশের হোঁচট

টানা তিন ম্যাচ জিতে উড়ছিল বাংলাদেশ। সিরিজ জয় নিশ্চিতে খানিকটা হেয়ালিভাবও কী চলে এসেছিল মেহরব হাসানের দলে? সেটারই খেসারত বোধহয় দিতে হলো শেষ দুই ম্যাচে। এবার বিজয়ীর হাসি আফগানিস্তানের যুবাদের মুখে। সিরিজ হারলেও শেষ দুই ম্যাচের জয়ে একমাত্র চারদিনের ম্যাচের জন্য প্রেরণা পেয়ে গেছে তাঁরা।

সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে পাঁচ ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজের শেষটায় আজ রোববার বাংলাদেশকে ৩ উইকেটে হারিয়েছে সফরকারীরা। স্বল্পপুঁজির ম্যাচে অবশ্য রোমাঞ্চও ছুঁয়ে গিয়েছিল। টাইগার যুবাদের দেওয়া ১৫৬ রানের লক্ষ্যে আফগানদের ব্যাট করতে হয়েছে একেবারে শেষ ওভার পর্যন্ত! স্নায়ুচাপের পরীক্ষায় উতরে তাঁরা জয় তুলে নেয় ৩ বল বাকি থাকতেই।

টসে জিতে ব্যাটিংয়ে নামা বাংলাদেশের শুরুটা ছিল দারুণ। দুই ওপেনার মফিজুল ইসলাম ও ইফতেখার হোসেন তুলেন ৪৮ রান। সেখান থেকে আরও ৮ রান যোগ করতেই নেই ৪ উইকেট! মফিজুলকে লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন নাঙ্গেয়ালিয়া খান। পরপর তিন ওভারে শিকার ধরেন বিলাল সামি। একে একে ফিরিয়ে দেন আরিফুল ইসলাম, আইচ মোল্লা ও ইফতেখারকে। আরিফ ১ ও আইচ ২ রানে বিদায় নেন। ৪০ বলে তিনটি চার ও একটি ছয়ে ২৬ রান আসে ইফতেখারের ব্যাট থেকে। ইজহারুল হক নাভিদের বলে দ্রুতই ফিরে যান টাইগার দলপতি মেহরব হাসান।

খানিক লড়াইয়ের পর ১৫ রান করে নাভিদের বলেই উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন তাহজিবুল ইসলাম। লড়াইয়ের ময়দান দখলে রেখেছিলেন আব্দুল্লাহ আল মামুন। কিন্তু তাকে বিভ্রান্ত করে ক্যাচ বানিয়ে বিদায় করেন শাহিদ হাসানি। ফেরার আগে একটি করে ছয় ও চারে ৮২ বলে ৩৭ রান আসে মামুনের ব্যাট থেকে। ১ রানের মধ্যে শেষ ৩ উইকেট হারিয়ে ‘প্যাকডআপ’ হয়ে যায় বাংলাদেশের ইনিংস। তখনও বাকি ১৪ বল!

স্বল্প রান তাড়ায় আফগানরাও হোঁচট খায়। ২৪ রানের মধ্যে ‘নাই’ হয়ে যায় তাদের দুই উইকেট। আশিকুর জামানের শিকারে পরিণত হন সাবাউন বানুরি ও সুলিমান আরবজাই। বিপদে হাল ধরেন ইসহাক জাজাই ও মোহাম্মদউল্লাহ নাজিবউল্লাহ। এ দুজনের জুটিতে ওঠে ৪৯ রান। টিকে থাকার সংগ্রামে ১১ রান করতে ৫০ বল খেলে ফেলা নাজিবউল্লাহ ফিরে যান রান আউট হয়ে। বিলাল আহমাদ তারিনকে দ্রুতই বোল্ড করে বাংলাদেশের শিবিরে আশা জাগান নাইমুর রহমান।

দারুণ ব্যাটিংয়ে ৬৯ বলে অর্ধশতক করা ইসহাক জাজাই এরপর টিকতে পারেননি বেশিক্ষণ। আশিকুরের বলে ডিপ মিডউইকেটে মফিজুলের ক্যাচ হওয়ার আগে ৭৯ বলে পাঁচটি চার ও দুটি ছয়ে ৫২ রান করেন জাজাই। নাঙ্গেয়ালিয়া খানও ফিরেন দ্রুত। কিন্তু দলপতি ইজাজ আহমাদ আজাদ ও ইজহারুল হক নাভিদ ছিলেন ধৈর্য্যের প্রতিমূর্তি হয়ে। ৭৭ বলে ৩২ রান করা আজাদ ফিরে গেলেও আফগানিস্তানের পা হড়কাতে দেননি নাভিদ। শেষ ওভারে জয়ের জন্য সফরকারীদের প্রয়োজন ছিল ৭ রান। প্রথম বলেই ফুলটস দিয়ে বসেন আশিকুর। ছক্কা মারার সুযোগ হাতছাড়া করেননি নাভিদ। এক বল ডট দিয়ে তৃতীয় বলে সিঙ্গেল নিয়ে জয়ে নোঙ্গর ফেলেন তিনি।

বল হাতে ২ উইকেটের পর ব্যাট হাতে ৪৯ বলে দুই ছক্কায় মহামূল্যবান ২৯ রান; ইজহারুল হক নাভিদের হাতেই তাই ওঠেছে ম্যান অব দ্য ম্যাচের পুরস্কার। ব্যাট হাতে সিরিজে ভালো সময় কাটানো বাংলাদেশের আইচ মোল্লা হয়েছেন সিরিজসেরা। আগামী বুধবার থেকে একই ভেন্যুতে শুরু হবে দুই দলের একমাত্র চারদিনের ম্যাচটি।

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৭.৪ ওভারে ১৫৫ রান। (মফিজুল ১১, ইফতেখার ২৬, আরিফুল ১, আইচ ২, মেহরব ৮, তাহজিবুল ১৫, মামুন ৩৭, কিবরিয়া ১৩, নাইমুর ১৬, আশিকুর ০*, মুশফিক ০। সামি ১০-১-৩৩-৩, জাদরান ৯-১-২৬-০, খোরাটে ৯.৪-০-২৭-৩, নাভিদ ১০-২-২৯-২, হাসানি ৮-১-২৫-২, নাজিবউল্লাহ ১-০-৮-০।)

আফগানিস্তান অনূর্ধ্ব-১৯ দল: ৪৯.৩ ওভারে ১৫৬/৭ (বানুরি ৭, আরবজাই ১৪, জাজাই ৫২, নাজিবউল্লাহ ১১, বিলাল ২, ইজাজ ৩২, নাঙ্গেয়ালিয়া ৩, নাভিদ ২৯*, সামি ০*। আশিকুর ৯.৩-১-৩৭-৩, মুশফিক ১০-০-৩২-১, আরিফুল ৫-১-১১-০, কিবরিয়া ২-০-১১-০, নাইমুর ১০-২-২৫-১, মেহরব ৬-১-১৮-০, আইচ ৭-২-২১-১)।