Main Menu

সিলেটসহ সারাদেশে নজরদারি বাড়িয়েছে বিএসটিআই

দেশে পণ্যের একমাত্র মাননিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই)। বাজারে বিক্রি হওয়া পণ্যের উৎপাদন, বাজারজাতকরণ, মোড়কীকরণ এবং বিক্রয় কার্যক্রম নজরদারির দায়িত্ব তাদেরই। সম্প্রতি এ কার্যক্রমে গতি বাড়িয়েছে সংস্থাটি। বেড়েছে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা ও সার্ভিলেন্স সেবাও।

জানা গেছে, বর্তমানে সিলেট ও ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতিদিন গড়ে দুটি ভেজালবিরোধী ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করছে বিএসটিআই। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান বাড়ায় অভিযুক্ত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যাও বেড়েছে। অথচ অভিযান পরিচালনা ও মামলার এ সংখ্যা কয়েক বছর আগেও বেশ কম ছিল। মূলত নিজস্ব কোনো ম্যাজিস্ট্রেট না থাকায় অভিযান পরিচালনায় সমস্যায় পড়তে হতো বিএসটিআইকে। গত বছর সংস্থায় তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তারপর থেকেই বাজারে নজরদারি বেড়ে গেছে বিএসটিআইয়ের।

সংস্থার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও সার্ভিলেন্স বেড়েছে। সার্বিক কার্যক্রমেও গতি ফিরেছে। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া। পাশাপাশি মহাপরিচালক থেকে শুরু করে দায়িত্বশীল সবাই বিশেষ নজরদারি করছেন। ফলে কার্যক্রমের পরিধি ও গতি দুটোই বেড়েছে

সংস্থার সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০২০-২১ অর্থবছরে ৬৫৩টি ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেছে বিএসটিআই। যেখানে ২০১৯-২০ অর্থবছরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয় ৪২৪টি। এর আগের ২০১৮-১৯ অর্থবছরে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হয় ৩৪৬টি।

এদিকে, ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯৪৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন, যা আগের অর্থবছরের তুলনায় আড়াইগুণ বেশি। ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩৭০টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মামলা করেছিল বিএসটিআই। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে মামলার সংখ্যা ছিল ৩৯৫টি।

অভিযান ও মামলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে জরিমানা আদায়ের পরিমাণও। সর্বশেষ অর্থবছরে সংস্থাটি ভেজালবিরোধী অভিযান চালিয়ে সাত কোটি ৪১ লাখ টাকা জরিমানা আদায় করেছে, যা আগের বছরে ছিল মাত্র দুই কোটি ৯৪ লাখ।

অন্যদিকে ২০২০-২১ অর্থবছরে এক হাজার ২৯৬টি সার্ভিলেন্স কার্যক্রম চালিয়েছে বিএসটিআই। এ কার্যক্রমে ২২৬টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে মামলা করে সংস্থাটি। এসব মামলায় সাজা হয়েছে ৪৩ জনের এবং ৫১টি কারখানা স্থায়ীভাবে সিলগালা করা হয়েছে।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, গত বছর সংস্থাটিতে নিজস্ব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করা হয়েছে। বর্তমানে বিএসটিআইয়ের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রয়েছেন। ফলে কার্যক্রমে গতি বেড়েছে। এর আগে অন্য সংস্থার ম্যাজিস্ট্রেট অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসেবে বিএসটিআইয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। ফলে মাঝেমধ্যেই ভেজালবিরোধী অভিযান থমকে থাকতো। নিয়মিত ভেজালবিরোধী বিশেষ অভিযান পরিচালনার কথা থাকলেও প্রয়োজনের সময়ে ম্যাজিস্ট্রেট পাওয়া যেতো না। সঙ্গে পুলিশ ফোর্স নিয়েও সমস্যা ছিল। কিন্তু এখন অভিযানের কাজে নিয়মিত সাহায্য করছে আনসার বাহিনী।

এ বিষয়ে বিএসটিআইয়ের পরিচালক (সিএম) মো. নূরুল আমিন বলেন, ‘সংস্থার ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান ও সার্ভিলেন্স বেড়েছে। সার্বিক কার্যক্রমেও গতি ফিরেছে। এর পেছনে সবচেয়ে বড় কারণ নিজস্ব ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ দেওয়া। পাশাপাশি মহাপরিচালক থেকে শুরু করে দায়িত্বশীল সবাই বিশেষ নজরদারি করছেন। ফলে কার্যক্রমের পরিধি ও গতি দুটোই বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘র‌্যাবের সঙ্গে বিএসটিআই এখন যৌথ অভিযান পরিচালনা করছে। এ ধারাগুলো আগামীতেও অব্যাহত থাকবে।’