Main Menu

কারন জানেন না বিমানের ইউকে ম্যানেজার

লন্ডন-সিলেট ফ্লাইট বন্ধ, ক্ষুব্ধ কমিউনিটি ও ট্রাভেল ব্যবসায়ীরা

বন্ধ হয়ে গেলো বাংলাদেশ বিমানের সরাসরি লন্ডন -সিলেট ফ্লাইট। গত ১৬ জুলাই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে এই সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। সিদ্ধান্তটি তাৎক্ষণিভাবে কার্যকর হচ্ছে বলে বিমানের ইউকে ম্যানেজমেন্ট সূত্রে জানা গেছে। ফলে ২৬ জুলাই, রোববার লন্ডনের হিথরো থেকে যাওয়া প্রথম ফ্লাইট থেকে সরকারের এই সিদ্ধন্ত কার্যকর হচ্ছে এবং ওইদিন থেকে বিমান আর সরাসরি সিলেট যাবে না। বিমান বাংলাদেশের এমন সিদ্ধান্তে ক্ষুব্ধ ব্রিটিশ-বাংলাদেশী কমিউনিটি ও ট্রাভেল ব্যসায়ীরা।

বিষয়টি সম্পর্কে বিমানের ইউকেস্থ ম্যানেজার হারুন খানের সাথে যোগাযোগ করে লন্ডন -সিলেট ফ্লাইট বন্ধের কারন জানতে চাইলে হলে তিনি বাংলামেইলকে জানান, তিনি কোনো কারন জানেন না তবে এটাই সরকারের সিদ্ধান্ত। এর বাইরে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তবে বলেন, গত ১৬ জুলাই সরকারি এই সিদ্ধান্তের বিষয়টি তাদেরকে জানানো হয়েছে। তিনি আরো বলেন, এখন থেকে যারা লÐন থেকে সিলেট ও চিটাগাং যাবেন তাদেরকে ঢাকায় ইমিগ্রেশন করে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে।

এদিকে, হঠাৎ করে সরকারের এমন সিদ্ধান্ত ক্ষুব্ধ করেছে ব্রিটিশ-বাংলাদেশী, ট্রাভেল ব্যবসায়ীসহ সর্বস্তরের কমিউনিটিকে।

লন্ডন টু সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধের বিষয়টি প্রথম প্রকাশ করেন ব্রিটিশ-বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্টির ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল এবং হিলসাইড ট্রাভেলসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর হেলাল খান। বিষয়টি সম্পর্কে তাঁর যোগাযোগের চেষ্টা করে মুঠোফোনে সংযোগ স্থাপন সম্ভবক হয়নি। তবে তাঁর ফেইসবুক স্ট্যাটাসের বিস্তারিত তুলে ধরা হলো। তিনি ২৬ জুলাই, রোববার তাঁর ফেইসবুক স্ট্যাটাসে এ সম্পর্কিত তথ্য ও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে লিখেন, “বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স (সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ) একটি নোটিশ দিয়ে আমাদের জানিয়েছে যে, এখন থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সে যারা লÐন থেকে সিলেট যাবেন তারা ঢাকায় ইমিগ্রেশন কর সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে এবং ঢাকা থেকে আবার নতুন করে বডিং পাস্ নিয়ে সিলেটে যাবেন। কেউ কি ভাবতে পারেন কতটুকু যুলুম-নিপীড়নমূলক মানসিকতা থেকে বিমানের ঐ সিদ্ধান্ত গ্রহণকারীরা এ কাজটি করছেন? নিঃসন্দেহে এটি একটি চরম সিলেট বিদ্ধেষী আচরণ! একজন ব্যবসায়ী হিসেবে নয়, সমাজের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি। আমাদের পূর্ব পুরুষদের রক্ত ঘামে গড়া দেশের মানুষের সাথে এই অমানবিকতার শেষ হোক। আসুন এ অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই এক সাথে।”

লন্ডন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধের সিদ্ধান্তের বিষয়টিকে বৃটেন প্রবাসী বাংলাদেশী কমিউনিটির সাথে সরকারের তামাশা ও অন্যায় আচরণ বলে মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট কমিউনিটি নেতা, সাংবাদিক কেএম আবু তাহের চৌধুরী। বাংলামেইলের সাথে আলাপকালে তিনি সিদ্ধান্তটি প্রত্যাহারের দাবী জানিয়ে বলেন, আমাদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিলো সিলেট-লন্ডন সরাসরি ফ্লাইট চালু করার। তা না করে সেটির বদলে চালু হওয়া লÐন-সিলেট সরাসরি ফ্লাইটটিও বাতিল করে আমাদের প্রতি তামাশা করা হয়েছে।

সিদ্ধান্তটিকে বৃটেন প্রবাসী সিলেটের মানুষের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ বলে মন্তব্য করেছেন একটি নিয়মিত যাত্রী। তিনি বলেন, সরকারের এমন সিদ্ধান্তের ফলে যাত্রী ভোগান্তি বাড়বে এবং এখানে জন্ম ও বেড়ে ওঠা পরিবারের সদস্য বার বার বিমান বদল এবং কাস্টমসের ঝক্কিঝামেলা করে দেশে যেতে আগ্রহ হারাবে।

উল্লেখ্য, কোভিড-১৯ এর কারনে বন্ধ রয়েছে লÐন টু সিলেট ফ্লাইট। করোনাকালেও লÐন থেকে কিছু ফ্লাইট সরাসরি ঢাকা শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে গমন করছে। যাত্রীদের এতদিন শুধুমাত্র লÐন থেকে বর্ডিং পাস নিলেই হত। কিন্তু যদি লÐন টু সিলেট সরাসরি ফ্লাইট বন্ধ হয়ে যায় তবে সিলেটের যাত্রীদের ঢাকায় ইমিগ্রেশন কওে সেখানেই তাদের ব্যাগেজ ক্লেইম করতে হবে এবং ঢাকা থেকে আবার নতুন করে বডিং পাস্ নিয়ে ডমেস্ট্রিক ফ্লাইটে সিলেটে যেতে হবে।

তাছাড়া লÐন টু সিলেট সরাসরি ফ্লাইট থাকলেও সিলেট টু লÐন সরাসরি ফ্লাইটের দাবী দীর্ঘদিনের হলেও দেশের সরকার তা বাস্তবায়ন করতে পারছে না। এ নিয়ে বিলেতে এসে মন্ত্রী, এমপিরা হরহামেশাই নানা ধরনের প্রতিশ্রæতি ও আশ্বাস দিয়ে যান। আর বিমানে যাত্রীদের হয়রানী আর বিড়ম্বনার অভিযোগতো নিত্য দিনের ঘটনা। এর মাঝেই লÐন টু সিলেটের যাত্রীদের নিয়ে বিমানের নতুন ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে।

এ নিয়ে ধীরে ধীরে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে ব্রিটিশ-বাংলাদেশী কমিউনিটিতে। কমিউনিটির সাধারণ মানুষ একে প্রবাসীদের প্রতি বিমানের জুলুম-নিপীড়নমূলক মানসিকতার বহিঃপ্রকাশ বলে মনে করছেন