Main Menu

যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক কোথায়?

ব্যাংক হিসাব তলবের পর যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর বিদেশ যাওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে। সূত্রগুলি জানিয়েছে, ঢাকা মহনগর দক্ষিণের সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাটসহ যুবলীগের একাধিক নেতা গ্রেপ্তার হওয়ার পর যুবলীগ চেয়ারম্যানের বিদেশ যাওয়ার ওপরও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।

যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ সংগঠনের চেয়ারম্যানের দেশত্যাগে সরকারের দেয়া নিষেধাজ্ঞার বিষয়টা জানেন না বলে জানান। তিনি বলেন, আমি যতটুকু জানি চেয়ারম্যান সাহেব বাসায় রয়েছেন।

নিজ সংগঠনের নেতাদের বিরুদ্ধে ক্যাসিনো ব্যবসা ও চাঁদাবাজির অভিযোগ ওঠার পরে প্রথমদিনেই বিষয়টি নিয়ে গণমাধ্যম নিজের ক্ষোভ ঝাড়েন যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। যদিও পরবর্তীতে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করেন তিনি।

এরপর বাংলাদেশ ব্যাংক তার সম্পদের হিসাব তলব করে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার করা হয়েছে যুবলীগের আরেক শীর্ষ নেতা ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটকে। তবে গত কয়েকদিন ধরেই দেখা যাচ্ছে না ওমর ফারুক চৌধুরীকে। সাংবাদিকদের সঙ্গেও কথা বলছেন না তিনি। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠেছে ওমর ফারুক চৌধুরী এখন কোথায়?

যুবলীগ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, সংগঠনের চেয়ারম্যান নিজের ধানমন্ডির বাসভবনেই রয়েছেন। কারো সঙ্গে দেখা দিচ্ছেন না। ফোনেও তার সঙ্গে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না।

চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের প্রথমদিকে অভিযান নিয়ে প্রশ্ন তুলেন ওমর ফারুক চৌধুরী। ১৯ সেপ্টেম্বরে সংগঠনের এক প্রোগ্রামে তিনি বলেন, ‘কেউ অপরাধ করলে শাস্তি হবেই। তবে প্রশ্ন হলো কেন এতদিন পর একজনকে গ্রেপ্তার করা হলো? আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এতদিন কোথায় ছিলেন? অতীতে সব জানতেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আমার দিকে আঙ্গুল তুলছেন। এতদিন কেন ব্যবস্থা নেননি? এখন বলছেন, ৬০টি ক্যাসিনো ছিল। তাহলে কি এতদিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আঙ্গুল চুষছিলেন? যে ৬০ জায়গায় ক্যাসিনো সেই ৬০ থানাকে অ্যারেস্ট করা হোক। সে সময় ক্যাসিনো চলল, আর সেই এলাকার পুলিশ কী করছে? র‌্যাব কী করছে? তাদের অ্যারেস্ট করা হোক। আমাকে অ্যারেস্ট করবেন করেন? রাজনীতি করি। আমাকে অ্যারেস্ট করবেন, আর আমি বসে থাকব? এতদিন ক্যাসিনো চলত, আপনারা জানতেন না?’

তবে এর পরের দিনই নিজের সুর নরম করেন ওমর ফারুক চৌধুরী। তিনি বলেন, দেশের প্রতিটি গণমাধ্যমে অবৈধ ক্যাসিনোর খবর ছাপা হচ্ছে এবং আমাদের দিকে ইঙ্গিত করা হচ্ছে। আমি বলতে চাই, আগে জানলে ক্যাসিনো ব্যবসায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা নিতাম। এখন আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সক্রিয় হয়েছে। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসবে তাদেরকে বহিষ্কার করা হবে।

এর আগে ১৬ সেপ্টেম্বর এক সাংগঠনিক প্রোগ্রামে তিনি বলেন, ‘পতন হলে স্ত্রী ছাড়া কেউ পাশে থাকে না। জমিনে উত্থান দেখেছি পতনও দেখেছি। পতন হইলে কেউ নাই, বৌ ছাড়া কেউ নাই।’

এছাড়াও যুবলীগের বিভিন্ন সাংগঠনিক কর্মসূচিতে সরকারে বিভিন্ন মন্ত্রী ও এমপিদের অনিয়মের বিষয়ে উত্থাপন করে তাদের সমালোচনয় মুখর থাকতেন তিনি।

এর পরেও কয়েকদিন সংগঠনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নেন ওমর ফারুক চৌধুরী। সর্বশেষ গত ৩ অক্টোবর সকালে গণভবনে আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাদে সঙ্গে তাকে দেখা যায়। ওই দিন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চারদিনের সফরে ভারত যান।

একটি সূত্রে জানা গেছে, ব্যাংক হিসাব তলবের পরে নিজেকে গুটিয়ে রেখে ধানমণ্ডির বাসভবনে আছেন ওমর ফারুক চৌধুরী। এখন দলীয় কোনো কর্মকাণ্ডেও তাকে দেখা যাচ্ছে না। ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানের পর থেকে যাচ্ছেন না ধানমণ্ডির পাঁচ নম্বর সড়কের যুব জাগরণের অফিসেও। যুব জাগরণের এই অফিসটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন ফারুক নিজেই।