Main Menu

যুক্তরাজ্যে বছরে জ্বালানি বিল প্রতি পরিবারে ৮০ শতাংশ বাড়বে

ব্রিটেনের প্রতি পরিবারের জ্বালানি বিল অক্টোবর থেকে বছরে গড়ে ৮০ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ১৮৮ ডলারে দাঁড়াবে। শুক্রবার জ্বালানি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষ এমনটাই জানিয়েছে। খবর রয়টার্সের।

নিয়ন্ত্রক শুক্রবার বলেছে, সরকার পদক্ষেপ না নিলে লক্ষ লক্ষ পরিবারকে জ্বালানি সংকটে এবং ব্যবসাগুলোকে বিপদে ফেলবে।

অফগেমের সিইও জোনাথন ব্রিয়ারলি বলেছেন, এই বৃদ্ধি সমগ্র ব্রিটেনের পরিবারগুলোর ওপর ব্যাপক প্রভাব ফেলবে। সেইসঙ্গে জানুয়ারিতে আরেকবার বৃদ্ধির সম্ভাবনা ছিল কারণ রাশিয়ার ইউরোপীয় সরবরাহ বন্ধ করার পদক্ষেপের ফলে পাইকারি গ্যাসের দাম রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে।

ব্রিটেনের শীর্ষস্থানীয় ভোক্তা অধিকার চ্যাম্পিয়ন মার্টিন লুইস সতর্ক করে বলেছেন, ‘এটি একটি বিপর্যয়। লোকেরা এই শীতে খাবার রান্না করতে বা তাদের ঘর গরম করতে না পারলে মারা যাবে।’

ব্রেয়ারলি বলেছিলেন, ‘জরুরি এবং সিদ্ধান্তমূলক’ পদক্ষেপের পাশাপাশি সংকটের মাত্রার সঙ্গে মিল রেখে সরকারের প্রতিক্রিয়া প্রয়োজন।

দুই সপ্তাহের কম সময় মেয়াদ বাকি থাকা প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তার উত্তরসূরি আগামী মাসে সবচেয়ে দুর্বলদের লক্ষ্য করে ‘অতিরিক্ত নগদ’ ঘোষণা করবেন।

জনসন সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিন্তু আমি মনে করি না আমাদের যা করা উচিত তা হলো সম্পূর্ণভাবে প্রত্যেকের জন্য, দেশের সবচেয়ে ধনী পরিবারের জন্য পুরো বিষয়টিকে সীমাবদ্ধ করার চেষ্টা করা।’

মে মাসে যখন মূল্যের পূর্বাভাস উল্লেখযোগ্যভাবে কম ছিল তখন সরকার এই শীতের জন্য ভোক্তাদের বিলের ওপর ৪৭২ ডলার ছাড় ঘোষণা করেছে।

বিরোধী লেবার পার্টি বলছে, তারা ক্ষমতায় থাকলে এর দাম ফ্রিজ করবে। ফলে যার খরচ বছরে প্রায় ৬০ বিলিয়ন পাউন্ড হতে পারে যা প্রায় কোভিড মহামারির সময়ের ফার্লো স্কিমের সমান।

এই চাপের প্রভাব পড়েছে ইউরোপজুড়ে। কিন্তু গ্যাসের ওপর নির্ভরশীল ব্রিটেনে দাম বৃদ্ধি মানে চোখে জল আনা।

গত বছর ১ হাজার ২৭৭ পাউন্ডের বার্ষিক গড় জ্বালানি বিল এই বছর ৩ হাজার ৫৪৯ পাউন্ডে গিয়ে দাঁড়াবে। শীর্ষস্থানীয় পূর্বাভাসক কর্নওয়াল ইনসাইট বলেছেন, ২০২৩ সালে এর দাম আরও বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

তাদের প্রেডিকশন মতে, দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বিল সর্বোচ্চ ৬ হাজার ৬১৬ পাউন্ড হবে এবং প্রতি পরিবারকে ২০২৩ সালে শুধু জ্বালানির জন্য মাসে প্রায় ৫০০ পাউন্ড খরচ করতে হতে পারে যা অনেকের জন্য ভাড়া বা বন্ধকের চেয়ে বেশি।

এই পরিস্থিতি মূল্যস্ফীতিকে ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় নিয়ে গেছে এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ড দীর্ঘ মন্দার বিষয়ে সতর্ক করেছে। হতাশাজনক দৃষ্টিভঙ্গি সত্ত্বেও ব্রিটেনের প্রতিক্রিয়া জনসনকে প্রতিস্থাপনের দৌড়ের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয়েছে যা আগামী ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চলবে। প্রক্রিয়াটি কর এবং ব্যয় কাটতে আগ্রহী রক্ষণশীল দলের সদস্যদের ভোটের ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে আছে।

এদিকে দুই প্রার্থী, পররাষ্ট্র সচিব লিজ ট্রাস এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী ঋষি সুনাক, কিভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবেন তা নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছে। দৌড়ে এগিয়ে থাকা ট্রাস প্রাথমিকভাবে বলেছিলেন, তিনি ‘হ্যান্ডআউট’ দেওয়ার চেয়ে কর কমাতে চান।

উভয় পক্ষই স্বীকার করেছে, সমাজের সবচেয়ে দরিদ্রদের সমর্থনের প্রয়োজন হবে। সরকার আগে বলেছির, কী করতে হবে লোকেরাই সেটা ভাল জানবে। এরপর শুক্রবার আবার বলেছে, তারা কতটা জ্বালানি ব্যবহার করে পরিবারগুলোকে তা দেখতে হবে।