Main Menu

বাবরি মসজিদের ভাগ্য বরণ করতে যাচ্ছে ঐতিহাসিক জ্ঞানবাপি মসজিদ!

বাবরি মসজিদের ভাগ্য বরণ করতে যাচ্ছে সাড়ে তিন শ বছরের পুরনো ভারতের বারাণসীর ঐতিহাসিক জ্ঞানবাপি মসজিদ। এ মসজিদে পূজার দাবি নিয়ে করা আবেদন জমা পড়েছে আদালতে। মসজিদ রক্ষায় আদালতে পাল্টা আবেদন জমা দিয়েছে মসজিদের তত্ত্বাবধায়ক সংস্থা আনজুমানে ইনতেজামিয়া কমিটি।

উভয় পক্ষের আবেদনের প্রেক্ষিতে আগামী ৩ ফেব্রুয়ারি শুনানি হবে বলে জানিয়েছেন বারাণসীর আদালত। আঞ্জুমানে ইনতেজামিয়া আবেদনপত্রে জানায়, ‘ঐতিহাসিক জ্ঞানবাপি মসজিদের চত্বরজুড়ে আর্কিওলজিকাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া বা ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ যে সার্ভে করতে চেয়েছিল, তাতে তাদের আপত্তি রয়েছে। বারাণসীর আদালত মুসলিমদের এই আবেদন গ্রহণ করেছে এবং ৩ ফেব্রুয়ারি এ নিয়ে শুনানি হবে বলেও জানিয়েছে।

পেছনের ইতিহাসি
ঐতিহাসিক জ্ঞানবাপি মসজিদ সম্পর্কে আইনজীবী বিজয়শঙ্কর রাস্তোগি জানান, ‘স্বয়ম্ভূ জ্যোর্তিলিঙ্গ ভগবান বিশ্বেশরের পক্ষ থেকে ১৯৯১ সালে পণ্ডিত সোমনাথ ব্যাস এবং অন্যরা আদালতে প্রথমবারের মতো একটি পিটিশন দাখিল করে।

তাদের দাবি, ‘জ্ঞানবাপি মসজিদে তাদের পুজো করার অনুমতি দিতে হবে। কারণ, মুসলিমরা মন্দির চত্বরের একটি অংশ দখল করে সেখানে মসজিদ নির্মাণ করেছে।’

আইনজীবী রাস্তোগি আরও জানায়, ‘১৯৯৮ সালে অতিরিক্ত জেলা জজ এই মর্মে নিম্ন আদালতকে নির্দেশ দিয়েছিল যে, ‘জ্ঞানবাপি চত্বর থেকে সাক্ষ্যপ্রমাণ সংগ্রহ করতে হবে, যাতে ওই মসজিদ চত্বরের ধর্মীয় অবস্থান এবং চরিত্র নির্ণয় করা যায়।’ সে সময় এলাহাবাদ হাইকোর্ট নিম্ন আদালতের এ নির্দেশের উপর স্থাগিতাদেশ জারি করে।

২০১৯ সালের ১০ ডিসেম্বর আইনজীবী রাস্তোগি আদালতে নতুন করে আরও একটি আবেদন দাখিল করে অনুরোধ জানান, ‘পুরো জ্ঞানবাপি মসজিদ চত্বরের একটি সার্ভে যেন তৈরি করে পুরাতত্ত্ব বিভাগ। রাস্তোগির দাবি, তিনি দেবতা স্বয়ম্ভূ জ্যোর্তিলিঙ্গ ভগবান বিশ্বেশ্বরের পরম মিত্র। পরম মিত্র হিসেবে তিনি এই পিটিশন দাখিল করছেন।

আদালত রাস্তোগির আবেদনপত্র গ্রহণ করে এবং ২১ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য করেছিল। পরে আনজুমান কমিটির সেক্রেটারি ইয়াসিন বলেছেন, এলাহাবাদ হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল, তা এখনও কার্যকরী রয়েছে। তাই নিম্ন আদালত এ সম্পর্কে কোনও সিদ্ধান্ত দেওয়ার অধিকার রাখে না।

বাবরি মসজিদ মামলার আদালতের রায় হওয়ার পরপরই বারাণসীর ঐতিহাসিক জ্ঞানভাবি মসজিদ নিয়ে এ মামলা মুসলমানদের ভাবিয়ে তুলছে। তাহলে কি জ্ঞানবাপি মসজিদও অযোধ্যার বাবরি মসজিদের ভাগ্য বরণ করতে যাচ্ছে। ধ্বংস করে দেয়া হবে সাড়ে তিনশত বছরের পুরনো ইসলামি ঐতিহ্য।

উল্লেখ্য যে, ১৬৬৯ খ্রিস্টাব্দে মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব বারাণসীতে ঐতিহাসকি জ্ঞানবাপি মসজিদ নির্মাণ করেছিলেন। এ মসজিদের পাশেই রয়েছে বারাণসীর ঐতিহাসিক কাশী বিশ্বনাথ মন্দির। উগ্র হিন্দুত্ববাদী আরআরএসসহ কিছু সংগঠনের দাবি জ্ঞানবাপি মসজিদ ও মথুরার একটি মসজিদ ছেড়ে দিতে হবে, যাতে তারা নির্মাণ করবে মন্দির।