কুলাউড়া স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স: টেকনোলোজিস্ট নেই, ২৬ বছর এক্সরে মেশিন তালাবদ্ধ!
মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে মেশিন উদ্বোধনের পর দীর্ঘ ২৬ বছর যাবৎ চালু হয়নি। মেডিকেল টেকনোলিাজিস্ট এর পদ খালি থাকায় মেশিনটি বন্ধ রয়েছে দীর্ঘ সময় ধরে। পরিত্যক্ত অবস্থায় তালাবদ্ধ আছে হাসপাতালের একটি কক্ষে। উপজেলার ১৩ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভার কয়েক লক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের একমাত্র আশ্রয়স্থল এই হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের পরীক্ষা করতে যেতে হয় প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। সরকারিভাবে যেসব পরীক্ষা অল্প খরচে করা সম্ভব ছিলো, সেখানে হাজার টাকা খরচ করে তা করতে হয় বাইরে থেকে।
সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ১৯৯৫ সালের ৭ ফেব্রুয়ারি উদ্বোধনের দিন খোলা ছিলো রুমটি এবং চালু ছিলো এক্সরে মেশিন। এরপর থেকে সেবা দিতে আজ অবধি এক্সরে রুমের দরজাটি খোলা হয়নি। এতে এক্সরে ও ইসিজির মতো গুরুত্বপূর্ণ সেবা থেকে বঞ্চিত উপজেলার প্রায় ৫ লক্ষ মানুষ।
জানা গেছে, উপজেলা ৫০-শয্যা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবা গ্রহিতারা ঊনত্রিশ প্যাথলজিক্যাল সেবা পাওয়ার কথা থাকলেও এক্সরে ইসিজির মতো জরুরি সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। প্রতিনিয়ত শত শত রোগিকে এক্সরের জন্য ছুটতে হয় শহরের প্রাইভেট ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোতে।
হাসপাতাল সূত্র জানায়, মেডিক্যাল টেকনোলজিস্ট নিয়োগ না দিলে সেগুলো চালানো সম্ভব নয়। যদিও মেশিনটি স্থাপনের পর বলা হতো কুলাউড়ার বিদ্যুতের ভোল্টেজ সমস্যার কারণে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। অথচ কুলাউড়া বিদ্যুৎ উপকেন্দ্র চালুর পর থেকে বলা হচ্ছে লোকবল সঙ্কটের কারণে সেটি চালু হচ্ছে না। কবে নাগাদ চালু হবে, সেটিও বলতে পারছেন না কর্তৃপক্ষ।
কুলাউড়া হাসপাতালের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব) সাঈদুর রহমান জানান, এক্সরে মেশিনটি অচল, ইসিজি করা হয় না। মেডিকেল টেকনোলজিস্ট গত ১৪ বছর থেকে নিয়োগ নেই। এছাড়া বায়োকেমেস্ট্রি পরীক্ষার জন্য একটি এনালাইজার মেশিনের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষার জরুরী ৮টি পরীক্ষা কুলাউড়া হাসপাতালের ল্যাবরেটরিতে করা সম্ভব হয় না। এগুলো হলো সিরাম ক্রিয়েটিনিন, এইচআইভি, এন্টি বডি নির্ণয়, এসজিপিটি- এসজিওটি, সারকুলেটিং ইসোনফিল, ইউরিক এসিড, টিউবারকুলিন টেস্ট ও এন্টিএইচসিভি। ফলে এসব পরীক্ষা করতে মানুষকে ছুটতে হয় জেলা কিংবা বিভাগীয় শহরে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ফেরদৌস আক্তার জানান, যা আছে তাই দিয়ে সীমাবদ্ধতার মধ্যে রোগিদের যতটুকু সম্ভব সেবা দেয়া হয়। টেকনোলজিস্ট নিয়োগ না দিলে এক্সরে ও ইসিজি সেবা দেয়া সম্ভব নয়।