Main Menu

কঠিন পরীক্ষার মুখে ব্রিটেন ও প্রধানমন্ত্রী বরিসের ভবিষ্যৎ

ওয়েস্টমিনস্টার পার্লামেন্ট পাঁচ সপ্তাহ স্থগিতকরণের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের ঐতিহাসিক রায়ের মধ্য দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বুঝতে পেরেছেন যুক্তরাজ্য (ব্রিটেন) যুক্তরাষ্ট্র নয়। আর তিনিও ‘স্বেচ্ছাচারী’ প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নন। সংসদীয় গণতন্ত্রের সূতিকাগার ব্রিটিশ পার্লামেন্ট চলে সম্পূর্ণভাবে এক গণতান্ত্রিক ‘চেক অ্যান্ড ব্যালান্স’ পদ্ধতিতে। সেখানে গণতন্ত্রের অবমাননা এবং ক্ষমতার অপব্যবহার একটি আইনি অপরাধ বলে গণ্য হতে পারে। ২৪ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সংসদ স্থগিতকরণের বিরুদ্ধে ১১ জন বিজ্ঞ বিচারপতির সে সম্মিলিত রায়ই ঘোষণা করেছেন ৭৪ বছর বয়স্ক যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের প্রথম মহিলা প্রেসিডেন্ট ব্যারোনেস ব্রেন্ডা হেইল। তিনি ২৫ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ১১টার (২৪ ঘণ্টা) মধ্যে উভয় হাউসের সদস্যদের ‘চলতি’ অধিবেশনে যোগদানের নির্দেশ দিয়েছেন। লেডি হেইল প্রধানমন্ত্রী জনসনের সংসদ স্থগিতকরণকে সম্পূর্ণ বেআইনি, বাতিল ও অকার্যকর বলে ঘোষণা করেছেন। তিনি রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের আদেশকে বাতিল বলে ব্যাখ্যা করে এ ক্ষেত্রে তাঁর (রানি) প্রতি প্রধানমন্ত্রী জনসনের পরামর্শকে বেআইনি বলে উল্লেখ করেছেন। সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট হেইল সে কারণে কখনোই সংসদ বা কমনসসভা স্থগিত করা হয়েছে বলে ধরে নেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন। আইন অনুযায়ী কখনোই সংসদের সাংবিধানিক কার্যক্রমের অবমাননা কিংবা সদস্যদের অধিকার ক্ষুণ্ন অথবা বাধাগ্রস্ত করা যাবে না। সে ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের রানি, প্রধানমন্ত্রীসহ কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন বলে আবারও প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বেআইনিভাবে কমনসসভা স্থগিতকরণের অভিযোগে সদস্যরা এখন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনকে বর্তমান দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়ার গুঞ্জন তুলেছেন। বলা হচ্ছে, তাঁর নেতৃত্বে আর আস্থা রাখা যায় না। তবে সব কিছুই নির্ভর করবে তাঁর রক্ষণশীল দলীয় সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্য কিংবা প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে সংসদে আনীত সম্ভাব্য অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষের শক্তির ওপর। ব্রেক্সিট প্রশ্নে অর্থাৎ তাঁর ঘোষিত ৩১ অক্টোবরের মধ্যে ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে বেরিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী জনসন অলিখিত ব্রিটিশ সংবিধানের প্রতি যে অবহেলা ও অসম্মান প্রদর্শন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে, তাতে তিনি শেষ পর্যন্ত পদত্যাগ করতে বাধ্য হলে অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। উল্লেখ্য যে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা না থাকার প্রশ্নে এরই মধ্যে পাঁচজন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। ব্রেক্সিট প্রশ্নে বর্তমানের ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ ব্রিটিশ রাজনীতির আরো অবনতি ঘটলে ক্ষমতার রাজনীতি থেকে বিদায়ের প্রশ্নে বরিস জনসন হবেন ষষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী।

কমনসসভায় বিরোধী দলের নেতা ও লেবার পার্টিপ্রধান জেরেমি করবিন গণতন্ত্রের অবমাননা এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের জন্য দোষী সাব্যস্ত হওয়ায় অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের পদত্যাগ দাবি করেছেন। তা ছাড়া জনসনের পদত্যাগ দাবি করেছেন লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির নেত্রী জো সুইনসন। সুইনসন বলেছেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে জনসন তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা হারিয়েছেন। অন্যদিকে লিব ডেমের সাবেক মন্ত্রী স্যার এড ডেভি বরিস জনসনকে অবিলম্বে জাতিসংঘে অনুষ্ঠিত সাধারণ পরিষদের অধিবেশন থেকে ফিরে আসার দাবি জানিয়েছেন, যাতে পার্লামেন্ট তাঁকে (জনসন) ক্ষমতা থেকে সরিয়ে দিতে পারে। এ ক্ষেত্রে ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষপাতী, সংসদে স্কটিশ ন্যাশনালিস্ট পার্টির নেতাসহ বিরোধীদলীয় অনেকেই, যাঁরা কোনো চুক্তি ছাড়া ইউনিয়ন ত্যাগ করার বিরুদ্ধে, প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের অপসারণ দাবি করে চলেছেন। অন্যদিকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জ্যেষ্ঠ সদস্য (এমইপি) গাইভার হবসস্টাড সুপ্রিম কোর্টের রায়ে স্বস্তি প্রকাশ করেছেন। যুক্তরাজ্যে এখনো আইনের শাসন ও গণতান্ত্রিক অধিকারের বিষয়টি জীবন্ত ও কার্যকর রয়েছে বলে তিনি আশ্বস্ত হয়েছেন বলে এক টুইট বার্তায় উল্লেখ করেছেন। তবে বিষয়টি নিয়ে এখনো বাকিংহাম রাজপ্রাসাদ নীরব রয়েছে। কিন্তু নীরব থাকেননি সাধারণ পরিষদের অধিবেশনের জন্য নিউ ইয়র্কে অবস্থানরত ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। যুক্তরাজ্যের সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রকাশিত হওয়ার পর এক তাত্ক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় তিনি সর্বোচ্চ আদালতের বিবেচনার প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করেছেন। তবে এ ব্যাপারে ব্রিটিশ সরকারপ্রধান হিসেবে তাঁর নিজস্ব এবং স্বাধীন মতামতের কথাও উল্লেখ করেছেন। তিনি বলেছেন, এ ক্ষেত্রে তাঁর ভিন্ন মতামত থাকলেও তিনি সে রায় মেনে নিয়েছেন। কিন্তু মেনে নেননি কমনসসভায় সরকারদলীয় নেতা জেকব রিজ মগ। তিনি বলেছেন, সংসদ সার্বভৌম। এ ক্ষেত্রে সরকারপ্রধানের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আদালত যে রায় দিয়েছেন, তা অনেকটাই সাংবিধানিক ক্যু-এর মতো। তাঁর মতে, সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরাও ব্রেক্সিটের পক্ষে কিংবা বিপক্ষে তাঁদের ভোট প্রদান করেছেন। এ ক্ষেত্রে তাঁরাও ষোলো আনা নিরপেক্ষ নন। এ রায়ে বিরোধী দলের রাজনৈতিক অভিমতই প্রতিফলিত হয়েছে বলে জেকব রিজ মগ অভিমত ব্যক্ত করেছেন। তাঁর বক্তব্য যথেষ্ট রাজনৈতিক বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। কিন্তু ব্রেক্সিট কিংবা ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকা না থাকা নিয়ে আরো বেশি বিতর্কের জন্ম দিয়েছেন বিরোধী দল লেবার পার্টির নেতানেত্রীরা। সারা ব্রিটেনের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ ২০১৬ সালে অনুষ্ঠিত গণভোটে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ত্যাগ করার পক্ষে মতামত প্রকাশ করলেও লেবার পার্টির ডেপুটি লিডার জন ম্যাকডোনেল ইউরোপীয় ইউনিয়নে থাকার পক্ষে দলীয় সাংগঠনিক প্রচার অব্যাহত রাখার পক্ষে মত দিয়েছেন।

ব্রেক্সিটের আগে দর-কষাকষির ব্যাপারে পূর্বঘোষিত ৩১ অক্টোবরের পর আর সময় চাওয়ার পক্ষপাতী নন প্রধানমন্ত্রী জনসন। আর সংসদ স্থগিতকরণের ব্যাপারেও হাঁটু গেড়ে কারো সামনে ক্ষমা চাওয়ার পক্ষপাতী নন তিনি। যাঁরা বরিস জনসনকে ঘনিষ্ঠভাবে জানেন, তাঁদের অভিমত হচ্ছে, তিনি (জনসন) প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফাও দেবেন না। বরং ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত ইউরোপীয় ইউনিয়নের চুক্তির ব্যাপারে একটি সাব্যস্তের জন্য অপেক্ষা করবেন, তারপর রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথকে জাতির উদ্দেশে ভাষণের জন্য অনুরোধ জানিয়ে দেশে একটি সাধারণ নির্বাচন ঘোষণা করে দেবেন। বরিস জনসনের মতে, অতীতে জাতি গণভোটে ব্রেক্সিটের পক্ষে চূড়ান্ত রায় দিয়েছে। এতে কোনো চুক্তির পক্ষে বা বিপক্ষে কোনো শর্ত ছিল না। তার ওপর নির্ভর করে প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন এত দিন সংগোপনে অনেকটা পথ এগিয়েছিলেন; কিন্তু তাঁর রক্ষণশীল দলের কিছু প্রভাবশালী রাজনীতিকসহ সম্মিলিত বিরোধী দল বর্তমানে তা অত্যন্ত জটিল ও কঠিন করে তুলেছে। সে কারণেই সাবেক লেবার দলীয় প্রধানমন্ত্রী টনি ব্লেয়ার জনগণ সত্যিকারভাবে কী চায়, তা জানার জন্য নির্বাচনের পরিবর্তে আরেকটি গণভোট আয়োজন করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। কারণ সাধারণ নির্বাচনে প্রতিটি দলেরই একাধিক ঘোষণা ও কর্মসূচি প্রকাশিত হতে থাকে। এতে সুস্পষ্টভাবে জনগণ ব্রেক্সিটের ব্যাপারে কোনো চুক্তির পক্ষে কিংবা বিপক্ষে কতটুকু মত প্রকাশ করতে পারবে? চুক্তির পক্ষে বা বিপক্ষে এরই মধ্যে এতটাই বিতর্ক সৃষ্টি করা হয়েছে যে খোদ ইউরোপীয় ইউনিয়নও এখন মনে করে, চুক্তি ছাড়া ব্রেক্সিটই অনেক সহজতর হবে। নতুবা চুক্তির ব্যাপারে সময় বাড়িয়ে এ সংকটের কোনো তাত্ক্ষণিক সমাধান হবে বলে তারা মনে করে না। এ ব্যাপারে একই অভিমত ছিল প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের। কিন্তু ক্ষমতার লড়াইয়ে নিজ নিজ দলের স্বার্থের প্রশ্নে সম্মিলিত বিরোধী দল বিষয়টিকে এতটাই জটিল করে তুলেছে যে পূর্বঘোষিত বা নির্ধারিত কোনো সময়ের মধ্যে সুস্পষ্টভাবে কোনো চুক্তিতে পৌঁছা সম্ভব হবে বলে তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করে না।

ব্রেক্সিটের আগে বিভিন্ন ক্ষেত্রে একটি সুস্পষ্ট চুক্তিতে পৌঁছার ব্যাপারে সম্মিলিত বিরোধী দল বারবার তাগিদ দিলেও তারা কোনো খসড়া আজও দেশবাসীর সামনে পেশ করতে পারেনি। অন্যদিকে বিষয়টি খুব সহজ নয় বলে এত দিন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও তাঁর ক্যাবিনেট সহকর্মী কিংবা দলীয় নেতানেত্রীদের কাছে সুস্পষ্টভাবে কিছু প্রকাশ করতে পারেননি। বিষয়টি নিয়ে এখন রক্ষণশীল দলের সদস্য, এমনকি নেতাদের মধ্যেও যথেষ্ট মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। লেবার পার্টিসহ বিরোধী দলের একটি বিরাট অংশ এখনো ইউরোপীয় ইউনিয়নে থেকে যাওয়ার পক্ষপাতী। তাদের মতে, সেটিই হচ্ছে সর্বশ্রেষ্ঠ ‘ডিল’। অথচ সার্বিক হিসাবে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ, বিশেষত ইংল্যান্ডবাসী এই মহূর্তে ব্রেক্সিটের পক্ষে। চুক্তির ব্যাপারে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তাদের ধারণা, চুক্তি ব্রেক্সিটের পরও হতে পারে, যা অমূলক নয়। অন্যদিকে ইংল্যান্ডের প্রাণকেন্দ্র কিংবা সারা দেশের রাজধানী লন্ডন ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে। লন্ডনবাসীর ধারণা, এটি হচ্ছে বিশ্বের একটি প্রধান বাণিজ্য কেন্দ্র। ব্রেক্সিট হলে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য ক্ষেত্রে লন্ডনবাসী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। ব্যবসা হারাবে, বাণিজ্য হারাবে এবং এমনকি কর্মসংস্থান হারাবে লন্ডন। অন্যদিকে স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ড রাজ্য হিসেবে ব্রেক্সিটের ঘোর বিরোধী। ব্রেক্সিট হলে তারা অনেক কিছু হারাবে আঞ্চলিক, ভৌগোলিক ও অর্থনৈতিকভাবে।

এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন শেষ পর্যন্ত নির্বাচন দিতে বাধ্য হলেও উল্লিখিত নেতৃস্থানীয় রাজনীতিকদের তাঁদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে আবার যথাযোগ্য মর্যাদায় ফিরিয়ে আনতে হবে। কারণ সামনের প্রস্তাবিত নির্বাচনে জিততে হলেও তাঁদের সাহায্য চাই। দলকে আবার আগের মতোই ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। ব্রেক্সিট প্রশ্নে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ রক্ষণশীল দলের পক্ষে রয়েছে এখনো। কিন্তু ব্রেক্সিটপূর্ব চুক্তির প্রশ্নে তাদের মধ্যে বিরাজিত বিভক্তি শেষ পর্যন্ত সর্বনাশ ডেকে আনতে পারে। ব্রেক্সিট প্রশ্নে লেবার পার্টি দুই ধারায় বিভক্ত। লেবার পার্টির সবাই ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে নয়। এ ব্যাপারে দলে কোনো সুনির্দিষ্ট অবস্থান নেই। লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বর্তমান ঝঞ্ঝাবিক্ষুব্ধ রাজনীতির মধ্যে বেশ কিছুটা এগিয়ে গেলেও সুনির্দিষ্ট রাজনৈতিক বক্তব্য ও ব্রেক্সিটের ব্যাপারে অবস্থান নিয়ে দোদুল্যমানতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। লেবার পার্টির মতো তাদেরও বক্তব্য যে ব্রেক্সিটের আগেই চুক্তি করতে হবে। কিন্তু কিভাবে করা হবে সে চুক্তি, তা নিয়ে কোনো খসড়াও প্রণীত হয়নি এখনো। তা ছাড়া বিভিন্ন প্রস্তাব দিয়ে ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে কোনো চুক্তির খসড়া দিলেই যে তারা তা মেনে নেবে—এমন তো নয়। সে কারণেই ভেতরে ভেতরে খেলছিলেন বরিস জনসন। সাবেক প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের প্রস্তাবগুলো আবার নতুনভাবে ভিন্ন কৌশলে হাজির করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। সেগুলো নিয়ে এরই মধ্যে জার্মান চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মার্কেল ও ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাখোঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আলোচনাও করেছেন। কিন্তু সম্মিলিত ব্রিটিশ বিরোধী দল, স্কটল্যান্ড ও উত্তর আয়ারল্যান্ডের সমস্যা মোকাবেলা এবং সর্বোপরি সংসদ স্থগিতকরণ প্রতিক্রিয়ায় এখন নাজেহাল হয়ে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। এ অবস্থায় ইউরোপীয় ইউনিয়নের কাছে কোনো অনুকূল পরিস্থিতি প্রত্যাশা করছেন না বরিস জনসন। ৩১ অক্টোবর আসতে আর মাত্র চার সপ্তাহের মতো বাকি। এ সময়টুকু প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের রাজনৈতিক অস্তিত্ব ও যুক্তরাজ্যের ভবিষ্যতের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ব্রিটিশ জনগণের মধ্যে এখন বিভিন্ন ভবিষ্যৎ সংকট ও সম্ভাবনার প্রেক্ষাপটে এক অদ্ভুত অস্থিরতা বিরাজ করছে। রক্ষণশীল দলের তরুণ ও অত্যন্ত সম্ভাবনাময় নেতা হিসেবে একসময় উত্থান ঘটেছিল বরিস জনসনের। এখন দেখা যাক বর্তমান অবস্থা কাটিয়ে একটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে তিনি কিভাবে যুক্তরাজ্যকে এগিয়ে নেন। এখনই তাঁর নেতৃত্বের বৈশিষ্ট্য তুলে ধরার যথার্থ সময় বলে অনেকে মনে করেন। নতুবা বরিস জনসন তলিয়ে যাবেন ব্রিটিশ রাজনীতির এক অতল গহ্বরে আরো অনেকের মতো।