Main Menu

ওসমানীনগরে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাৎ: করোনায় আটকা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত

সিলেটের ওসমানীনগরে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দপ্তরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হলেও প্রধান শিক্ষক এখনো রয়ে গেছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। এ ঘটনায় প্রধান শিক্ষকেও অভিযুক্ত করে লিখিত অভিযোগ দেওয়া হয়েছে উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে। শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্ত করে দেখার জন্য পৃথক আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৮ জুন ২ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত পৃথক আরেকটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হলেও করোনার কারণে তদন্ত কার্যক্রম শুরু হয়নি।

এদিকে এ ঘটনায় শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করায় অভিবাবকদের মাঝে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। একাধিক অভিবাকরা বলেন, উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার বিষয়টি বেশ কিছুদিন ধরে চলছে। প্রধান শিক্ষককে জানিয়েও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। প্রধান শিক্ষক নিজেকে বাঁচাতে দপ্তরিকে বলিরপাঠা বানিয়েছেন।

এর আগে, উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করলে শুধু মাত্র দপ্তরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য জেলা শিক্ষা অফিসে তদন্ত প্রতিবেদন প্রেরন করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।

অভিভাবকরা বলছেন, টাকা আত্মসাতে প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরি দুজনের পারস্পরিক যোগসাজশ থাকলেও শুধুমাত্র দপ্তরির বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয়েছে।

জানা গেছে, উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের পাঠুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের উপবৃত্তিধারী ১০৯ জন শিক্ষার্থীর ২০২০ সালের (জুলাই-ডিসেম্বর) ৬ মাসের টাকা অভিভাবকদের মোবাইলে এসে জমা হয়। নগদ একাউন্টে টাকা জমা হওয়ার পর বিদ্যালয়ে কর্মরত দপ্তরি আখতার হোসেন শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের অজ্ঞতার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে তাদের মোবাইল থেকে উপবৃত্তির টাকাগুলো নিজ একাউন্টে নিয়ে নেন। পরে কাউকে অর্ধেক আবার কাউকে না দিয়েই কয়েক হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন।

গত ১৬ জুন এ বিষয়টি নিয়ে স্কুলে এক বৈঠক বসলে দপ্তরি আখতার হোসেন নিজের দোষ স্বীকার করে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রহমান এসবের সাথে জড়িত বলে দাবি করে। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার প্রতিশ্রুতিতে তড়িঘড়ি করে বৈঠক মুলতবি করা হয়।

বিষয়টি জানতে পেরে উপজেলা শিক্ষা অফিসের উদ্যোগে সহকারি শিক্ষা কর্মকর্তা দিলীপময় দাশ চৌধুরী ও ছানাউল হক সানিকে নিয়ে এ সংক্রান্ত একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তদন্ত কার্যক্রম শেষে শিক্ষার্থীদের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনায় দপ্তরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বায়েজিদ খান কর্তৃক স্বাক্ষরিত একটি নির্দেশনা গত ৩০ জুন উপজেলা শিক্ষা অফিসে এসে পৌঁছায়। এতে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন সুপারিশ করা হয়নি বলে জানা গেছে। প্রধান শিক্ষকের নির্দেশে বিদ্যালয়ের দপ্তরি এমন কার্মকান্ড ঘটালেও শুধু মাত্র দপ্তরির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করায় পার পাচ্ছেন প্রধান শিক্ষক। বিষয়টি জানতে পেরে উপবৃত্তির টাকা আত্মসাতে বিদ্যালয়ের দপ্তরির পাশাপাশি প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার দাবি জানিয়ে গত ২৩ জুন এলাকাবাসী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফ মো. নেয়ামত উল্ল্যা বলেন, প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে এলাকাবাসীর কাছ থেকে পাওয়া অভিযোগ জেলা শিক্ষা অফিস বরাবর প্রেরণ করা হয়েছে। এ বিষয়ে গত ২৮ জুন ২ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে ৭ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু লকডাউনের কারণে তদন্ত কমিটি এখনো কাজ শুরু করতে পারেনি।