Main Menu

৩০ ডিসেম্বর গনজোয়ারের কাছে ভেসে যাবে সব অন্যায় অত্যাচার আর আর আওয়ামীপাপ!!

প্রসংঙ্গ ডঃ কামাল হোসেন, “পুট আপ অর শার্ট আপ” প্রিয় পীর হাবিব

লন্ডনে ক্রিসমাস ডে বক্সিং ডে চলছে। সব কিছুই বন্ধ। গত লেখার পর ভেবেছিলাম ২৫/২৬/২৭ ডিসেম্বর আর কিছুই লিখবোনা। কারণ লেখালেখিতে প্রচুর সময় ব্যয় হয়। এ তিন দিন ছুটি, ঐ যে গান ছিল “আজ আমাদের ছুটিরে ভাই আজ আমাদের ছুটি”। ছুটি কাটানোর জন্য একটা প্রোগ্রাম করেছিলাম, কিন্তু তা আর হলোনা। উপরের হেডিংটি আমি ধার করেছি সাবেক বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী জন মেজর সাহেবের এক বক্তৃতা থেকে। তিনি যখন ক্ষমতায় ছিলেন তখন বৃটেনের অবস্থা কনজারভেটির পার্টির অবস্থা খুব একটা ভালো ছিলনা। কয়েক দিন পর পর জন মেজরের নেতৃত্ব চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তো। পার্টির যারা তার নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জ করতেন, একদিন তিনি বিরক্ত হয়ে তাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, আমি গত পাঁচ বছর থেকে প্রধানমন্ত্রী আছি আমি দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছি। আমি যদি না পারি তাহলে চলে যাবো , কিন্তু কয়েকদিন পর পর যদি লিডারশীপ চ্যালেঞ্জের মুখে পড়ে তাহেল তো সরকারের জন্য দলের জন্য সমস্যা। আমি যদি আগামী নির্বাচনে জয়লাভ করতে না পারি তাহলে পদত্যাগ করে চলে যাবো। কিন্তু কয়েক দিন পর পর লিডারশীপ নিয়ে চ্যালেঞ্জ করলে স্বাভাবিক কাজ কর্মে সমস্যা হয় অতএব “ইটস টাইম টু পুট আপ অর শার্ট আপ”।

ঐক্যফ্রন্টে ডঃ কামাল হোসেন সাহেবকে নিয়ে যেভাবে যে ভাষায় কথা বার্তা বলা হচ্ছে তাতে আমার কাছে কেন জানি মনে হয়েছে জন মেজর সাহেবের সেই ঐতিহাসিক বক্তব্যটিই প্রযোজ্য “পুট আপ অর শার্ট আপ”। এ যাবৎ কালে যারা কামাল হোসেন সাহেবের সমালোচনা করেছেন তাদের ব্যাপারে আমার বলার কিছুই নেই, কিন্তু যখন দেখি পীর হাবিব সাহেবের মত সাংবাদিক, কামাল হোসেন সাহেবকে নিয়ে লিখেন তার নেত্রীকে খুশী করার জন্য তখন তো দু’কলম লিখতে হয়।
আমার এ ছুটির দিনগুলো ভালভাবে কাটাতে দিলেননা বাংলাদেশের জাদরেল লেখক, যার লেখা পেলেই আমি এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলি, আমার অত্যন্ত প্রিয় একজন লেখক জনাব পীর হাবিব। তিনি লেখায় যেমন পারদর্শী কথাও বলেন সুন্দর করে গুছিয়ে। কিছু দিন আগে তিনি লন্ডনে এসেছিলেন ভেবেছিলাম এক সন্ধ্যায় তাকে ডেকে নিয়ে আড্ডা দিবো কিন্তু হয়নি তিনিও প্রচন্ড ব্যস্ত সময় কাটিয়েছেন আমিও লন্ডনের বাইরে কোথায় চলে গিয়েছিলাম। পরে শুনেছি তিনি চলে গেছেন ঢাকায়। পীর হাবিব সাহেবের একটি লেখা আমার নজরে আসার পর পরই পড়েছি, লেখার শিরোনাম “ডঃ কামাল কেন পাপের বিষ ধানের শীষ নিলেন” অনেক ভাবনা চিন্তা করে লিখার উত্তর দিচ্ছি। পীর হাবিব সাহেব আমার এ লেখাকে কোনো দৃষ্টতা নিবেননা আশা করি। কারণ ঢাকায় যারা লেখক সাংবাদিক তারা অনেক জ্ঞানী এবং গুনী। আমি নগন্য একজন সংবাদ কর্মী, মনের শান্তির জন্য লিখি প্রশান্তি মিলে। আমার কাছে মনে হয় পৃথিবীতে লেখার চাইতে বড় প্রতিবাদের সুস্থ মাধ্যম আর দ্বিতীয়টি নেই।

পীর হাবিব সাহেবের লেখার প্রথম লাইনটিতেই আমার আপত্তি। তিনি লিখেছেন, “গণরায়ের কাউন্ট ডাউন এখন শেষ পর্বে”।

কিসের গণরায় প্রিয় পীর? এ নির্বাচনে গণরায় আপনি কোথায় পেলেন? মামলা হামলা তো আছেই। তার উপরে নির্বাচনে যারা প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তারা ভোটারদের বাড়ী পর্যন্ত যেতে পারছেনা। গতকালকে সিলেটের এক গ্রামে খবর নিয়েছি ওরা বলেছে , যে গ্রামে বিএনপি সে গ্রাম পুরুষ শুন্য,দফায় দফায় পুলিশ গ্রামে যায়, এটা কি নির্বাচন? এটা গণ রায় হবে কি করে? আওয়ামীলীগ তো নির্বাচন এবং গণরায়ের ধরণই বদলে দিয়েছে! তা ছাড়া প্রতিদিন হাইকোর্ট থেকে বিএনপির প্রার্থীদের মনোয়ন বাতিল হচ্ছে। কিন্তু কেন? ঋণ খেলাপী হলেই শুনেছি তার সমস্যা আছে! আওয়ামীলীগে ঋণ খেলাপি নেই? আপনি লিখেছেন কামাল হোসেন কেন ধানের শীষ পাপের বিষ নিলেন? এটা কেমন কথা? নির্বাচনে ডঃ কামাল হোসন বিএনপির সাথে ঐক্য করেছেন, জামাতের সাথে তো তিনি ঐক্য করেননি। তা ছাড়া জামাত তো এখন নিবন্ধিত দলও নয়। এরশাদ সাহেবের সাথে আওয়ামীলীগ কোয়ালিশন করেনি? এলায়েন্স করেনি? ইনু সাহেব ,মতিয়া চৌধুরী দিনের পর দিন আওয়ামীলীগের মন্ত্রী সভার সদস্য ছিলেন না? সব জায়গায় রাজাকারের দোহাই দেয়া হয়, যুদ্ধাপরাধীর দোহাই দেয়া হয়। যারা যুদ্ধাপরাধী তাদের তো বিচার হচ্ছে। আাপনারা যারা সাংবাদিক তারা কি গত দশ বছরে একটি বারের জন্য বলেছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আপনার বেয়াই খন্দকার মোশারফ হোসেন তো বিখ্যাত রাজাকার পরিবারের, সে পরিবারে আত্মীয়তা করতে গেলেন কি করে? আর করেই যখন ফেলেছেন তখন তাকে সৈয়দ আশরাফ সাহেবের মত লোককে সরিয়ে রাজাকার বেয়াইকে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী করে মন্ত্রানালয়ে বসান কি করে?

পীর হাবিব লিখেছেন, গত ১০ বছরের শাসনামলের টানা উন্নয়ন, বিশ্ব নেত্রী, উপমহাদেশের ভোট সংস্কৃতির বিচ্ছিন্ন হামলা এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও সব দলের অংশগ্রহনে ভোটের দামামা বেজে ওঠায় দেশ জুড়ে গভীর রাত পর্যন্ত মানুষ ভোটের উৎসবে মেতেছে!!!! প্রিয় হাবিব ভাই, এ ডাহা মিথ্যা কথাটি আপনি কি করে লিখলেন? জানি আপনি ছাত্রলীগ করেছেন, আপনাদের পরিবারই এক সময় আওয়ামী রাজনীতি সুনাগঞ্জে প্রতিষ্ঠিত করেছিল, উপহার হিসেবে আপনি আপনার ভাই মিসবাহ সাহেবকে জাতীয় পার্টি থেকে এমপি বানিয়েছেন। পীর মিসবাহ ভালো একজন মানুষ স্বজ্জন পরিচ্ছন্ন এমপি, তিনি লন্ডনে একবার এসেছিলেন আমি তাকে আমার ষ্ট্রেইট ডায়লগ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলাম তিনি এসেছিলেন কথা হয়েছে। আমি মনে করি পীর মিসবাহ যে কোনো দলের জন্য এসেট। ভালো রাজনীতিবীদের তো অকাল রয়েছে দেশে সে তুলনায় পীর মিসবাহ সাহেবকে আমার ভালো মনে হয়েছে। তিনি আর যাই করুন না কেন অন্তত বৃদ্ধ বয়সে এইচ টি ইমাম স্যারের মত অবলীলায় মিথ্যা কথা বলবেননা। এইচ টি ইমাম স্যার যে বলেছেন, আওয়ামীলীগের এমপিরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কে একজন সেদিন ইমাম স্যারের মন্তব্যটি আমার ইনবক্সে পাঠিয়ে নীচে লিখে দিয়েছে বছরের সেরা জৌক!! অবশ্য ছোট খাটো ধরণের মানুষরা নাকি ওভার চালাক হোন। তিনি একবার আমার অনুষ্ঠানে এসে আমি প্রশ্ন করার আগেই আওয়ামীলীগের সব অপকের্মর কথা বলা শুরু করে দিয়েছিলেন। আমি বলেছিলাম, স্যার আামি তো আপনাকে এসব জিজ্ঞাস করিনি। তিনি বলেছিলেন, জিজ্ঞাস করবেন তো, তাই আগে ভাগেই বলে ফেলি। ইমাম স্যার সব সময়ই দ্রুততার সহিত কাজ করেন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে কাজ করেছেন, খন্দকার মোশতাক সাহেবের মন্ত্রী সভা সাজিয়েছেন, এখন তিনি শেখ হাসিনার মন্ত্রী সভাও সাজান। তিনি নির্বাচনে আওয়ামীলীগের কো-চেয়ারম্যান ও!! নির্বাচন নিয়ে ইমাম স্যার যে রক্তের হোলিখেলা খেলার পরামর্শ শেখ হাসিনাকে দিচ্ছেন তাতে কি দেশ সিরিয়ার আসাদের পথে হাটে কি-না সেটাই আমাকে তাড়িত করছে। তবে পৃথিবীতে কোনো স্বৈরশাসকই বেশী দিন ঠিকতে পারেনি।

সে যাক, আপনি আরো লিখেছেন শেখ হাসিনার ব্যক্তি ইমেজ এবং তার রাজনৈতিক জনসমর্থন ঘিরে নৌকা ভাসছে গণজোয়ারে!! অন্যদিকে কামাল হোসেন সাহেবের হাতে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত এবং সর্বশেষ শাসনামলের পাপের ভারে নিমজ্জিত নেতৃত্বহীন ধানের শীষ ভোটারদের কাছে আকর্ষণ হতে পারেনি। প্রিয় পীর হাবিব, এতই যখন ব্যাক্তি ইমেজ, এতই যখন গণজোয়ার তাহলে নির্বাচন নিয়ে এই ভানুমতির খেলা কেন খেলছেন আপনার এ প্রিয় নেত্রী? বিএনপি একটি নেতৃত্বহীন ভঙ্গুর দল। আমি সেটা মানলাম। তার পরও বিএপিকে নিয়ে এত ভয় কেন? মিটিং করতে দিচ্ছেন না, মিছিল করতে দিচ্ছেননা। গণগ্রেফতর করেছন বলছেন ২ জানুয়ারীর পরে ছেড়ে দিব ইত্যাদি।

একটি কথা অবশ্য আপনি সত্য লিখেছেন নির্বাচনে মনোয়ন বানিজ্যের কথা, আমি লন্ডনে তারেক রহমান সাহেবের ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষকে জিজ্ঞাস করেছি তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। আপনি লিখেছেন ডঃ মোশারফ হোসেন সাহেবের সাথে জেদ্দাভিত্তিক পাকিস্তানী গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা মেহমুদের সাথে টেলিফোন কনভারসেশন ফাঁস, আচ্ছা পীর হাবিব সাহেব এত বিরোধী দলের নেতা নেত্রীদের ফোনালাপ ফাঁস হয়, কিন্তু সরকারী দলের নেতৃবৃন্দের ফোনালাপ ফাঁস হয়না? এই যে ব্যাংকিং সেক্টরে ২২ হাজার কোটি লুটপাট, শেয়ার মার্কেট কেলেংকারী, বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি, স্বর্ণ কয়লা এসবের কি জবাব দিবেন প্রিয় পীর হাবিব? মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আবারো ক্ষমতায় গেলে দুর্নীতির বিরুদ্ধে তিনি জিরো টলারেন্স প্রয়োগ করবেন। গত ১০ বছর যেখানে তিনি পারেননি সেখানে আগামীতেও পারবেননা। আর দুর্নীতি পৃথিবীর সব দেশেই হয়, কম আর বেশী। দেখা দরকার কারা দুর্নীতির সাথে জড়িত, এখন যদি সরকারের ঘনিষ্ঠ মানুষ জড়িত থাকে, তাহলে কি করবেন? মানুষের কাছে তো তথ্য প্রমাণ আছে কে কোথায় দুর্নীতি করেছেন? আমি তো অনেককেই চিনি যারা দুর্নীতি করে শুধু আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হয়নি তারা বট গাছে রুপান্তরিত হয়েছে। বাতাসে তো অনেক কথাই কানে আসে। লন্ডনে বসে অনেকের তো দুর্নীতির কথা শুনি। কিছুদিন আগে আপনাদের বাংলাদেশ প্রতিদিন এর ইউরোপ সংস্করণের প্রকাশনা উৎসবে গিয়েছিলাম গিয়ে দেখি সেখানে এক মন্ত্রী মহোদয় বসে আছেন। বক্তৃতা কি করেছি সেটা এখানে আর না-ই বা উল্লেখ করলাম। আপনার যদি জানতে ইচ্ছে করে তাহলে নঈম নিজাম সাহেবের কাছ থেকে জেনে নিবেন প্লিজ।

প্রিয় পীর হাবিব, আপনারা যারা ঢাকায় সাংবাদিকতা করেন আমি জানি আপনাদের হাত পা বাঁধা, স্বাধীনভাবে আপনারা লিখতে পারেননা, কথা বলতে পারেননা। আপনাদেরকে যদি খামোষ বলা হয় তাহলে আপনাদের মান সম্মান ইজ্জত সব ধুলোয় মিশে যায়। আর বর্তমান সরকারের কেউ যদি কোনো সাংবাদিককে মেরে ফেলে কেউ যদি অকথ্য ভাষায় গালিও দেয় তাহলে আপনাদের চামড়ায় সেটি প্রবেশ করেনা। আপনাদের চামড়া অনেক শক্ত। আপনারা সাগর রুনির রক্তের ওপর দাড়িয়েও টেলিভিশনের লাইসেন্স নেন, মন্ত্রী হন। এ সরকারের আমলে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করা হয়েছে, দলীয় করণ করা হয়েছে। র‌্যাব পুলিশ, বিজিবি, সর্বশেষ সেনাবাহিনীকেও এ নির্বাচনে বিতর্কিত করার চেষ্টা করছে প্রথম শ্রেণীর একটা অপদার্থ নির্বাচন কমিশনার, অবশ্য তাকে নির্দেশ দিচ্ছেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী।

জামাতে ইসলামের ব্যাপারে আপনি যা লিখেছেন আমি সেখানে তর্কে যেতে চাইনা। জামাতে ইসলামী এবং যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে এবং বিচার হবে সেখানে চেতনা ব্যবসার ধোঁয়া তুলে মাঠ অন্ধকার করার কোনো দরকার নেই। বিএনপি যদি জামাতে ইসলামীকে ছেড়ে দিত তাহলে আওয়ামীলীগ ঠিকই হেফাজতের আল্লামা সুফি সাহেবের মত কাজে লাগিয়ে দিত। তখন কিন্তু জামাতে ইসলামের লোকজনকে খন্দকার মোশারফ হোসেন সাহেবের মত মন্ত্রী বানিয়ে দিত আওয়ামীলীগ।

আপনি লিখেছেন “ ভারতের সর্বশেষ লোকসভা নির্বাচনে নরেন্দ্র মোদীর ইমেজ ক্যারিশমা ও ভোট যুদ্ধের প্রচারণা কৌশল এতটাই সফল হয়েছিলো যে বিজেপির নাম ভুলে গিয়ে শ্লোগান উঠেছিল ”আর কি বার মোদি কা সরকার” মানে ”এইবার মোদির সরকার” সেই শ্লোগানের সামনে সোনিয়া ও রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বাধীন কংগ্রেস জোট ভোটের ময়দানে নিস্প্রভ হয়ে পড়েছিল। ডঃ মনমোহন সিংয়ের ১০ বছরের শাসনামলে সেই ভোটযুদ্ধে কোনো প্রভাব ফেলা দূরে থাক নির্বাচনী ফলাফলে অসার প্রমাণিত হয়েছিল। সেই ভোটের ফলাফলে ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাসে কংগ্রেসকে শোচনীয় পরাজয়বরণ করতে হয়েছিল”।

পীর ভাই খুবই যুগোপযোগী উদাহারণ। তবে ভারতের নির্বাচনের সাথে আপনি বাংলাদেশের নির্বাচনের অবকাঠামো দিকগুলো কিভাবে মিলাবেন? গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের মাথা ফাঠিয়ে? মেজর আকতারুজ্জমানের মত ডাক সাইটের একজন পার্লমেন্টারিয়ানের মাথা ফাটিয়ে? সর্ব কনিষ্ট যে মেয়েটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে তার মিছিলে মিটিংএ হামলা করে? পুলিশ এবং ছাত্রলীগ মিলে যে নির্বাচনী প্রচারে হামলা করলো তাদেরকে পুলিশ প্রটেকশন না দিয়ে উল্টো ধরে নিয়ে যাচ্ছে। আপনি এ উদাহরণটি যদি উল্টো করে দেখেন শেখ হাসিনার দশ বছরের শাসনামলের এত উন্নতি, এত মারপিট, এত হামলা মামলা, খালেদা জিয়াকে জেলে, তারেক রহমানকে নির্বাসিত রেখে ঐক্যফ্রন্টকে নির্বাচনি মিছিল মিটিং না করা এত কিছু করার পরও যদি ফিফটি পার্সেন্ট ফ্রি এন্ড ফেয়ার ইলেকশন হয় তাহলে আমি আপনাকে চ্যালেঞ্জ করে বলতে পারি, কংগ্রেসের মত শেখ হাসিনার নৌকা ডঃ কামাল হোসেনের ঐক্যফ্রন্টের কাছে শোচনীয়ভাবে পরাজয়বরণ করে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে। মানুষ শ্লোগান তুলবে ”আর কি বার ঐক্যফ্রন্টের সরকার”।

আপনি আরো লিখেছেন, শেখ হাসিনার দশ বছরের শাসনামলে সুশাসন প্রশ্নবিদ্ধ হলেও তার নেতৃত্বের ক্যারিশমা দেশের অর্থনৈতিক খাতের বিশাল অর্জন—-, দশলাখ রোহিঙ্গার আশ্রয় দান দেশে বিদেশে প্রসংশিত হয়েছে তাই সারা দেশে শ্লোগান উঠেছে শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার।

প্রিয় পীর হাবিব সাহেব, আওয়ামীলীগের চামচা এবং কর্মী যারা তারাই শ্লোগান তুলেছে শেখ হাসিনার সরকার বার বার দরকার। আর আমি অত্যন্ত বিনয়ের সাথে বলছি যেটি বাজারে প্রচারিত আপনাদের মতো আওয়ামীপন্থী— লেখক সাংবাদিকরাই যেমন আপনি, মোজাম্মেল বাবু ভাই, বন্ধুবর সৈয়দ বোরহান কবীর, নঈম নিজাম ভাই, মঞ্জুরুল আহসান বুল বুল সাহেব, শ্যামল দা, ইকবাল সোবহান চৌধুরী সাহেব সহ নাম না জানা আরো অনেকেই বর্তমান সরকারের অন্যায় কাজ কারবারকে লিখে টক শোতে কথা বলে সমর্থন করেন। যা সাংবাদিকতার সব নীতিমালার বাইরে। আপনাদের কাছে আমার বিনীত অনুরোধ আপনারা সাংবাদিক, আপনারা লেখক যাই হয়েছে অতীতে সব ভূলে গিয়ে ৩০ তারিখ এর নির্বাচনটা অন্তত অবাধ সুষ্ঠ ও সন্দুরভাবে সবার কাছে গ্রহন যোগ্য করার চেষ্টা করুন। আমার কাছে যা খবর আছে তা হলো সব রাজনৈতিক দলকে নিয়ে একটি দেশ খেলছে। এবং তারা ও বুঝে না বুঝে তাদের হাতের পুতুল হয়ে খেলছেন, বিনিময়ে দেশটার ১২ টা বেজে যাচ্ছে। দেশকে নিয়ে কেউ ভাবছে বলে মনে হয়না। আওয়ামীলীগ ভাবছে তারা যদি ক্ষমতায় না যায় তাহলে তাদের পিঠের চামড়া থাকবেনা। আর ঐক্যফ্রন্ট বিএনপি ভাবছে এবার ক্ষমতায় না যাওয়ার মানে হলো তাদের অস্তিত্ব বিপন্ন। বিপরীতে দেশ গৃহযুদ্ধের দিকে এগুচ্ছে। আল্লাহ তালাহ আমাদের সবাইকে বহিঃশক্তির নষ্টামী চালচতুরী বুঝার তৌফিক দান করুন আর আমরা যারা সাংবাদিক লেখক তারা যেন কোনো দলের দালালী না করি, কোনো দেশের গোয়েন্দা সংস্থার কথায় ফরমায়েশী লিখা না লিখি। আমরা যে দেশের দালালি করি, যে দেশ আমাদেরকে জন্ম দিয়েছে যে দেশের আলো বাতাসে আমরা বড় হয়েছি সে দেশের জন্য আমাদের অনেক কিছুই করার আছে। দালালী করলে নিজের বাড়ী গাড়ী ঢাকা শহরে ২/১ টি এপার্টমেন্ট হয়, এর চাইতে তো আর বেশী কিছু হয়না। একজন সৎ সাংবাদিকের যতটুকু সম্মান একজন অসৎ দালাল সাংবাদিকের কি সমান সম্মান? আমি জানিনা। এটা ভালো বলতে পারবেন ঢাকায় যারা দালাল সাংবাদিক তারা। দালাল সাংবাদিকদের আল্লাহ তালাহ যেন হেফাজত করেন আমীন।

লেখক সভাপতি ইউকে বাংলা প্রেস ক্লাব
সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক চ্যানেল আই ইউরোপ