Main Menu

আমাকে সুস্থ জীবনযাপন করতে দিন: পরীমনি

‘যৌন আক্রমণ ও হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগ তুলে ব্যপক সাড়া ফেলে দেয়া চিত্রনায়িকা পরীমনি বলেছেন তিনি সুস্থ জীবনে ফিরতে চান। সেজন্য তাকে সাহায্য করার অনুরোধ করেছেন পরীমনি।

তিনি বলেছেন, যত দ্রুত সম্ভব তিনি আবার কাজে ফিরে যেতে চান।

আজ বিকেলে গোয়েন্দা পুলিশের সাথে কথা বলেছেন ‘যৌন আক্রমণ ও হত্যাচেষ্টার’ অভিযোগ তুলে সাড়া ফেলে দেয়া ঢাকাই চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় নায়িকা পরীমনি।

গোয়েন্দা পুলিশের কার্যালয়ে তিনি তিন ঘণ্টার মতো অবস্থান করেন।

সেখান থেকে বের হয়ে পরীমনি সাংবাদিকদের বলেন, যত দ্রুত পুলিশ কর্মকর্তারা হস্তক্ষেপ করে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করেছেন – তাতে তিনি আশ্বস্ত বোধ করছেন যে তিনি বিচার পাবেন।

গতকাল সাভার থানায় ঢাকার একটি ক্লাবে তাকে ধর্ষণের চেষ্টা ও হত্যার চেষ্টার অভিযোগ এনে মামলা করেন পরীমনি। মামলায় পরীমনি ছয়জনের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ আনেন।

সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে তাকে প্রশ্ন করা হয়, প্রথম দেয়া তার বক্তব্যের সাথে পরের বক্তব্যে অসঙ্গতি রয়েছে কেন।

পরীমনি বলেছেন, “সবাই আমাকে গুড ভাইব দেয়ার চেষ্টা করছে, আর আপনারা আমাকে এসব প্রশ্ন করছেন। আমি প্রথমে (অভিযোগে) যা বলেছি সেটাই।”

বনানী থানার সিসিটিভি ফুটেজে তাকে অসংলগ্ন দেখা গেছে কেন? সাংবাদিকদের করা এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, “আমিতো বলেছি আমাকে জোর করে মুখে এইভাবে ধরে মদ গেলানো হয়েছিল।”

“সেই অবস্থায় আমি তখন বুঝতে পারছিলাম না মদে আর কি মেশানো আছে। আমি মরে যাচ্ছিলাম, এটা জানাতেই থানায় গিয়েছিলাম যে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। এটাতো আমি বলেছি, তিন দিন ধরে বলছি। আপনারা কি শোনেননি?”

পরীমনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে চান সেবিষয়ে উল্লেখ করে বলেন, “এখানে কথা বলার পর আমি এখন মেন্টালি রিফ্রেশড ফিল করছি। আমাকে কাজে ফিরতে হবে। ওনারা (পুলিশ) আমার কাজ নিয়ে কথা বলেছেন। নরমাল লাইফে ফিরে যাওয়ার সাপোর্ট দিয়েছেন।”

১৩ ই জুন প্রথমে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পাতায় লিখে এবং পরে সংবাদ সম্মেলন করে তাকে ধর্ষণ চেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন ঢাকাই ছবির শীর্ষস্থানীয় ও প্রভাবশালী নায়িকা পরীমনি।

একই সাথে তিনি অভিযোগ করেন যে গ্রেফতারকৃত নাসির উদ্দিন মাহমুদ তাকে বিষয়টি চেপে যাওয়ার জন্য ভয়ভীতি প্রদর্শনী করেছেন।

সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের সামনে কথা বলার সময় বারবার কান্নায় ভেঙে পড়ছিলেন পরীমনি।

সে নিয়ে সম্প্রচারিত ভিডিওতে নাসির উদ্দিন মাহমুদ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ অস্বীকার করে উল্টো পরীমনির বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন যে পরীমনি ও তার বন্ধুরা মদ্যপ অবস্থায় অনেক রাতে ক্লাবে আসেন।

ক্লাবের বার থেকে দামি মদের বোতল জোর করে নেয়ার চেষ্টা করেন।

তিনি স্থানীয় সাংবাদিকদের বলেন, “ওনারা যখন আসেন তখন আমি বের হয়ে যাচ্ছিলাম। ক্লাবে তখন সিকিউরিটি, অফিসার, সেক্রেটারি তেমন কেউ উপস্থিত ছিল না। তারা খুব উশৃঙ্খল ভাবে ঢুকেছে। ওদের সাথে একটা ছেলে ছিল সে তখনই দুলতেছিল। এরা সবাই মদ্যপ অবস্থায় ঢুকেছে। এরা বারের কাউন্টার থেকে খুব দামি ড্রিংকসের বোতল নেবার চেষ্টা করেছে। আমি তাদের বলি যে এটা নিতে হলে কোন অ্যাকাউন্টের এগেনস্টে নিতে হবে…..।”

এরপর ভিডিওর কথা আর বোঝা যায়নি এবং ভিডিওটি খণ্ডিত।

নাসির উদ্দিন মাহমুদের করা এই অভিযোগ পরীমনি অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেছেন যে, “আমি মদ ছিনতাই করতে গিয়েছিলাম? এটা কি সম্ভব আসলে? আমাকে সুস্থ জীবন যাপন করতে দেন। আমাকে নতুন করে কাজ শুরু করার সাপোর্ট দেন।”

দুপুরের আগে জানা গিয়েছিল যে পরীমনিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আজ গোয়েন্দা বিভাগের কার্যালয়ে যেতে বলা হয়েছে।

বিকেল তিনটা থেকে ছয়টা পর্যন্ত সেখানে তিনি অবস্থান করেছেন। গোয়েন্দা পুলিশের যুগ্ম কমিশনার হারুন-অর-রশিদ সাংবাদিকদের বলেছেন যে পরীমনি তাদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাতের জন্য এসেছিলেন।

ঘটনার সময় তোলা ১৫ সেকেন্ডের একটি ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে। সংবাদ সম্মেলনেও ১৫ সেকেন্ডের একটি ভিডিওর কথা উল্লেখ করেছিলেন পরীমনি।

ভিডিওটিতে কোন ব্যক্তিকে দেখা যাচ্ছে না। কিন্তু দুই ব্যক্তিকে ব্যাপক বাদানুবাদ ও গালাগাল করতে শোনা যাচ্ছে। ধাক্কাধাক্কি এবং ভাঙচুর হচ্ছে বলেও মনে হচ্ছে।

সামাজিক মাধ্যম ফেসবুকে পরীমনির প্রায় এক কোটি ফলোয়ার রয়েছে।

তার ভেরিফায়েড পেজে অভিযোগ তুলে তিনি যে পোষ্ট করেছেন সেখানে সাতষট্টি হাজার কমেন্ট এবং একলক্ষ আশি হাজার রিঅ্যাকশন দেখা যাচ্ছে।

নড়াইলের মেয়ে শামসুন্নাহার স্মৃতি চলচ্চিত্রে পরীমনি হিসেবে পরিচিত। গত প্রায় এক দশক ধরে বাংলাদেশের বাণিজ্যিক চলচ্চিত্রে অভিনয় করছেন এই অভিনেত্রী।

২০২০ সালে ফোর্বস ম্যাগাজিনের করা এশিয়ার ১০০ ডিজিটাল তারকার তালিকায় ঠাঁই করে নিয়েছিলেন তিনি।